ক্যাম্পাস

জাবি ক্যাম্পাস যেন ময়লার ভাগাড়, অপরিচ্ছন্নতাই চিরাচরিত চিত্র

মেহেদী হাসান

৩ এপ্রিল ২০২৪ , ৯:৫২:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নৈসর্গিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে সেই সৌন্দর্যে যেন কালো দাগ পড়েছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা আর খাবারের উচ্ছিষ্ট। দুর্গন্ধময় পরিস্থিতিতে চলাফেরাই যেন দায় হয়ে পড়েছে সবার।

একজন শিক্ষার্থীর বাসস্থান ও শৃঙ্খলা তত্ত্বাবধান, তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্যোগ নিতে হবে। সেটা তো দূরের বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলিক পরিচ্ছন্নতায়ই যথাযথভাবে রক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ক্যম্পাসের সার্বিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে।

ক্যাম্পাসে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য অপসারণের জন্য মাত্র ৬৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাজ করছেন। নেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন। অল্প যে কয়টি ডাস্টবিন আছে তা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় তাতে ময়লা উপচে পড়তে দেখা যায়। এছাড়াও ক্যাম্পাস পরিষ্কারের দায়িত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের কর্মকর্তারা থাকলেও একরকম অবহেলা ও খামখেয়ালীর ফলে ক্যাম্পাসজুড়ে প্রতিনিয়ত ময়লার পরিমাণ বেড়েই চলছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, অমর একুশে ভাস্কর্য ও বিভিন্ন রাস্তার দু’পাশে ছড়িয়ে আছে কাগজ, খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ, পলিথিন, চিপসের মোড়ক, কোমল পানির বোতলসহ নানা আবর্জনা। এছাড়াও বেশিরভাগ অ্যাকাডেমিক এবং আবাসিক ভবনের শৌচাগারগুলো খুবই অপরিষ্কার এবং অস্বাস্থ্যকর চিত্র নজরে এসেছে।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সিফাতুল্লাহ বলেন, ’একসময়ের ফুলের সুবাস এখন ঢাকা পড়ছে দুর্গন্ধে। আবাসিক হল, বিভিন্ন চত্বরে, অনুষদ, দোকানপাট ও রাস্তার পাশে জমে উঠেছে আবর্জনার স্তূপ। যা একদিকে যেমন দুর্গন্ধ অন্যদিকে নানা জীবাণু ছড়াচ্ছে। এছাড়াও মশার বংশবিস্তার ঘটছে, শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা অসুখ-বিসুখে।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ’আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় শুধু বর্জ্য সংগ্রহ করে ডাম্পিং করা হয়। এটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কারণ এখান থেকে প্রতিনিয়ত রোগ-বালাই ছড়াচ্ছে, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।’

এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বলেন, ’রমজান মাসে অনেকেই ইফতার করে উচ্ছিষ্ট খাবার ও ময়লা-আবর্জনা ফেলে যাচ্ছে। এরফলে ক্যাম্পাস দ্রুত ময়লা হচ্ছে। আমাদের অল্প লোক নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস পরিষ্কার করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও লোকবল সংকট নিরসনে প্রশাসনের উদ্যোগ নিয়ে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায় নি তাকে।

আরও খবর

Sponsered content