৫ মার্চ ২০২৩ , ১:০২:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
যশোরের বাঘারপাড়ায় ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে নাজমুল হক নামের এক যুবকের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে যশোরের বিজ্ঞ আদালত। এছাড়া জরিমানা করা হয়েছে একলাখ টাকা। ঘটনার ১ বছর ৩ মাসের মাথায় রোববার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এ আদেশ দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নাজমুল হক ওরফে বান্দে আলী বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের ঠাকুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা নওশের আলীর ছেলে।
আদালতের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি এডভোকেট সেতারা খাতুন। ধর্ষণ ও নিহতের শিকার রিক্তা খাতুন (৬) একই গ্রামের মুক্তার হোসেনের মেয়ে। রিক্তা স্থানীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মক্তব ভিত্তিক শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
২০২১ সালের ২০ নভেম্বর, সকাল থেকে এলাকায় রিক্তাকে খোঁজ করে পায়না তার পরিবার। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির এক পর্যায় পুকুরে এবং আশেপাশের খানা গর্তের ভেতর তল্লাশি চালায়।
তাদের সাথে মিশে আসামি নাজমুলও খোঁজাখুজি করতে থাকেন। এর মধ্যে নাজমুলকে তার বাড়ির কাছে একটি ফাঁকা যায়গায় গর্ত করতে দেখতে পান এলাকাবাসী।
তার কাছেই শিশুটির স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে নাজমুলকে জিজ্ঞাসা করলে সে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে এলাকাবাসী তাকে আটক করেন।
এরপর নাজমুল এলাকাবাসীর কাছে স্বীকার করেন রিক্তার লাশ তার নিজের ঘরের খাটের নিচে বস্তার ভেতর লুকানো আছে। তিনি আরো জানান, রিক্তাকে প্রথমে তিনি ধর্ষণ করেন এবং পরে তাকে হত্যা করে লাশ ওই গর্তের ভিতর পুতে রাখার চেষ্টা করছিলেন।
পরে থানা থেকে পুলিশ এসে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং নাজমুলকে আটক করেন। এ ঘটনায় রিক্তার বাবা মুক্তার আলী বিশ্বাস বাদী হয়ে যশোরের বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আটকের পর পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করলে, হত্যা ও ধর্ষণের বিষয়টি তিনি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
তখন থেকেই আটক রয়েছেন নাজমুল। এরপর মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৭ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আওয়াল হোসেন। এ মামলায় ১৬ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৫ মার্চ রবিবার বিজ্ঞ আদালত বাদী এবং আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায় শোনানোর পর আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন ।
এ রায়ে মামলার বাদীসহ তার পরিবারের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সেইসাথে দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকারের দাবি জানান বাদী পক্ষ।
আসামি পক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। আসামিপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।